[ প্রয়াত চিত্রকর প্রকাশ কর্ম্মকারের ছবি ও কবিতা নিয়ে আমার এই লেখাটা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত অন্তর্জাল পত্রিকা 'পরস্পর'-এ, জানুয়ারি ২০১৭ সালে।
এই লেখাটিতে ব্যবহৃত তথ্য, ছবি ও কবিতার জন্য ঋণ স্বীকার : কৌরব পত্রিকা এবং সন্দীপ রায় পরিচালিত তথ্যচিত্র 'নৈরাজ্যে স্বতন্ত্র প্রকাশ'। ]
আশির দশকে কৌরব-সাহিত্যপত্রিকার পাতায়, ইলাস্ট্রেশানে ও প্রচ্ছদে পাঠকের সুযোগ হয়েছিল কয়েকজন প্রথিতযশা চিত্রকরের কাজ দেখতে পাওয়া। এঁদের মধ্যে প্রধানতঃ ছিলেন প্রকাশ কর্ম্মকার, রবীন মন্ডল, যোগেন চৌধুরী ও আরও অনেকে। বিখ্যাত কবি ও লেখকরা যেমন মাঝে মাঝে কৌরবের জন্য ছবি এঁকে পাঠিয়েছেন –যেমন সুনীল, শক্তি, সন্দীপন, বিনয়, কমলকুমার, অমিয়ভূষণ, -তেমনই বিখ্যাত চিত্রকরও কখনো অক্ষরে লিখে ফেলেছেন কয়েক লাইন কবিতাও। এরকমই একজন প্রিয় চিত্রকর ছিলেন প্রকাশ কর্ম্মকার (১৯৩৩-২০১৪)। তাঁর প্রধান সৃষ্টিশীল সময় জুড়ে এবং পরবর্তী কালেও রং-তুলি-ক্যানভাসের এরিনায় ওঁর মাপের দুরন্ত গম্ভীর দাপুটে রসময় উপস্থিতি আর বিশেষ দেখা যায়নি। আশির দশকের মাঝামাঝি জামসেদপুরে চিত্রকরদের এক কর্মশালায় তাঁর সাথে আমার প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল। কৌরব পত্রিকার প্রধান কবি কমল চক্রবর্তীর অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন তিনি। আমার তোলা কমলের কয়েকটা পোর্ট্রেট ছবি দেখে এতটাই ভালো লেগেছিল তাঁর যে সেবার ওঁর বিশেষ অনুরোধে আমি ওঁর কয়েকটা সাদা-কালো ছবি তুলে দিয়েছিলাম, আমার ক্যানন এসেলার ফিল্ম ক্যামেরায়। পরে বড় প্রিন্ট করে উপহার দিয়েছিলাম ওঁকে।
মনে পড়ছে, কৌরবের প্রচ্ছদে একবার ছাপা
হয়েছিল (জুলাই ১৯৮৩) তাঁর লাল-কালো লাইন ব্লকে আঁকা একটি ছবি ; দূর আকাশে বাঁকা
চাঁদের দিকে দীর্ঘ পেশীবহুল হাত বাড়িয়ে দেওয়া এক পুরুষ, যার পিঠে আরূঢ়া মুক্তকেশী
ভয়ার্ত এক যুবতী। ভারী অদ্ভুত তাঁর বলিষ্ঠ রেখা ও রঙের এই কম্পোজিশান। এইসব ছবি
কোনও কবিতার উৎস হয়ে উঠতে পারে, পক্ষান্তরে এই ছবির উৎসেও থাকতে পারে কবিতার
প্রভাব।
প্রকাশ কর্ম্মকারের জীবন ও চিত্রকলা নিয়ে
রচিত হয়েছে সন্দীপ রায় পরিচালিত ‘নৈরাজ্যে স্বতন্ত্র প্রকাশ’ নামক একটি মূল্যবান তথ্যচিত্র,
যাতে আছে প্রকাশের কর্মজীবনের কিছু তথ্য ও তাঁর ছবি ও অঙ্কনপদ্ধতি নিয়ে বন্ধুজনের
মতামত।
অল্প বয়সে বাবার মৃত্যুর পরে খুব দারিদ্র্য
কষ্ট অনটনের মধ্যে দিয়ে দিন কেটেছে প্রকাশের। পথে পথে ঘুরে বেড়িয়েছেন আর মনোযোগ
দিয়ে দেখেছেন বড় রাস্তা ছোট গলি আর ফুটপাথের মানুষজনের দৈনন্দিন জীবনযুদ্ধ। এর
মধ্যেই গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে পড়াশোনা সেরে ফেলেছেন। ওঁর বাবা ছিলেন সেকালের
প্রখ্যাত পেন্টার প্রহ্লাদ কর্ম্মকার, দারিদ্র্যে জীবন কেটেছিল তাঁরও। একবার সানফ্রান্সিস্কোতে চিত্রপ্রদর্শনীর
এক বিয়ানালে, মাতিস পেয়েছিলেন গোল্ড মেডেল আর পিতা প্রহ্লাদ কর্ম্মকার পেয়েছিলেন
ব্রোঞ্জ। কলকাতায় কাঁকুড়্গাছিতে নিজস্ব স্টুডিওতে, তিরিশের দশকে, প্রহ্লাদই প্রথম
লাইভ মডেল রেখে ন্যুড স্টাডির প্রচলন করেন। পরবর্তী কালে প্রকাশ নিজেও মডেল বসিয়ে
স্টুডিয়োতে ন্যুড ছবি এঁকেছেন অনেক।
প্রকাশের প্রথম দিকের ছবির বিষয় ছিল
অনেকাংশে ফুটপাথের জীবন। দোকানদার, পাখিওয়ালা, বুটপালিশ,
এইসব। প্যাস্টেলে বা ওয়াটার কালারে কিছু ছবি আঁকলেও প্রকাশের পরিণত বয়সের বেশিরভাগ
কাজই কিন্তু ছিল আক্রাইলিক তেল রঙে ও ক্যানভাসে। ঐখানেই ছিল ওঁর নিজস্বতা। দেশ
স্বাধীন হওয়ার আগে পরের উত্তাল জনজীবন, দাঙ্গা হিংসা দারিদ্র খাদ্য-আন্দোলন, এই
সবই প্রকাশের মননকে, ছবিকে, মনোজগতকে প্রভাবিত করেছিল। বাবা প্রহ্লাদ কর্ম্মকারের
স্টুডিওতে দাঙ্গাকারীরা আগুন লাগিয়ে দিলে বাবার সমস্ত ছবি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মনোজগতে
গচ্ছিত সেইসব আতঙ্ক হতাশা নিপীড়নের বিষাদস্মৃতি থেকে অনেক রুগ্ন অসহায় ভয়ার্ত মানুষের
মুখ ক্রমে এসেছে প্রকাশের ছবিতে।
১৯৬৮ সালে ইউনেস্কোর ফেলোশিপ পেয়ে প্রকাশ
চলে যান প্যারিস, লন্ডন, সুইজারল্যান্ড, স্পেন,
আর ইটালির ফ্লোরেন্সেও --নয় মাসের জন্যে। চীজ আর ওয়াইনের বড় বোতল কোটের পকেটে নিয়ে
সারাদিন ঘুরে ঘুরে বড় বড় শিল্পীদের ছবির প্রদর্শনী দেখতেন। রোমাঞ্চিত হতেন। রাতে
উত্তেজনায় ঘুম আসতো না।
দেশে ফিরে এসে নতুন করে ভাবনা চিন্তা শুরু
হোল। তখন মনে হোল, আমাদের পুকুর নদী খেজুরগাছ কলাগাছ, যা কিছু দেশজ সম্পত্তি, -গাঙ্গেয়
পশ্চিমবঙ্গ অথবা গঙ্গাপারের এলাহাবাদ, - সেগুলো আঁকবো না কেন ? প্রকাশ তখন
এলাহাবাদের নৈনিতে বৈদ্যনাথ আয়ুর্বেদ কম্পানিতে কর্মরত। প্রেসের কাজ দেখাশোনা
করেন। দীর্ঘ আঠারো বছর ১৯৭০-১৯৮৮ সেখানেই।
আমার মনে আছে, ঐ সময় ওঁর নৈনির ঠিকানাতেই
কৌরব পত্রিকার প্রত্যেক সংখ্যা ওঁকে ডাকযোগে পাঠাতাম আমরা। বাদামী কাগজে র্যাপ
করে নিজের হাতে ঠিকানা লিখেছি। ১৯৮৩ সালে প্রকাশের একগুচ্ছ কবিতা প্রথম ছাপা
হয়েছিল কৌরব পত্রিকার ৩৮ সংখ্যায়। তার প্রায় সব কবিতারই কেন্দ্রে রয়েছে নারী, -চৈতালী, প্রতিমা,
ঈশ্বরী, সম্রাজ্ঞী, -যেভাবে যারা মনকে ছুঁয়েছে। জীবনকে নানাভাবে দেখা ; ফ্রেমে আঁটা সংসার, অথবা
বিচূর্ণ ফুলদানে মানব জীবন।
“শ্রাবণের চিঠি / রাংতায়। / কিছু ফুলে ভরা
/ হৃদয়ের পাত্রখানি অসংখ্য টুকরোয়। / হে ঈশ্বরী / এখন বিচূর্ণ ফুলদানে মানব জীবন।
/ বুঝেছি আমি, / স্বর্গের সহবাসে... / তুমি ভীষণ একা। / এক সম্রাজ্ঞীর মতো।” [কবিতা
: প্রতিমা / প্রকাশ কর্ম্মকার]
কৌরবের ঐ সংখ্যাতেই আছে ওঁর আরেকটি কবিতায়,
“ভিখারী হৃদয়ে অর্দ্ধেক পৃথিবী দিতে পারি তোমায়... / জানি, তোমার দানপাত্রে রয়েছে নারীর শরীর /
চপলতার উর্বর স্তন, গ্রীবা / নিতম্বের তলে
উচ্ছৃঙ্খল শরীরী ছলনা।” [কবিতা : নারী / প্রকাশ কর্ম্মকার]
একটি কবিতায় প্রকাশ লিখেছিলেন, “স্টেনলেস
স্টীলের চাঁদে, সুকান্তের রুটি ঝলসায় । / এখন শবের শরীরী বিপ্লব, / পড়ে থাকা ফুটপাথে / পঁয়ত্রিশ বছরের তেরঙ্গা যুবকের
বুকে, স্বপ্নের স্মৃতি / সবুজ রাম লক্ষ্মণ সীতা হনুমান । রাজপথে /
কার্তিকের রতিস্পৃহায় / যোনি দিয়ে নেমে আসে নিরোধ লাল, / দেয়ালে ক্যালেন্ডার ছবি”।
গুচ্ছ কবিতা ছাপার শেষে কবিতা-সম্পাদক
লিখেছিলেন, “প্রকাশ যেভাবে রঙে, ব্রাশে গোটা ভারতবর্ষ নাচিয়ে তুলেছেন, তাঁর সেই
ভয়ংকর ভালোবাসা এবং স্বেচ্ছাচার রয়েছে কবিতা নির্মাণে”।
গ্রামবাংলার নদীনালা মাঠপুকুর চষাক্ষেত,
বয়স্ক প্রাচীন তাল খেজুর বট নারকেলের গাছ, জটিল শিকড়বাকড় নিয়ে মাটি কামড়ে দাঁড়িয়ে
থাকা নির্বাক সব মহাদ্রুম। আর পাতায় মাটিতে ঘাসে, ছায়ায় জলে শিকড়ে, প্রাণজীবনের
গায়ে গায়ে সারাদিন নানান আলোর তুলি বুলিয়ে প্রকৃতিকে মহিমান্বিত করে যায় যে দিবাকর। ভোরের আলো,
বেলাশেষের আলো, নিশি জ্যোৎস্নার আলো, জলে
তরঙ্গে প্রতিফলিত যে আলো, যা মথিত করে আমাদের বোধকে।
ল্যান্ডস্কেপ কখনো নির্বাক স্থির রহস্যময়
দুর্বোধ্য। কখনো সেখানেই মূর্ত হয়ে উঠছে জীবন থেকে উঠে আসা নানান মানবিক বোধ আবেগ
আর্তি বিষাদ প্রার্থনা কথোপকথন। সারা ক্যানভাস জুড়ে স্পষ্ট অস্পষ্ট কম্পমান সেইসব
হরেক ইশারা। জীবনের অন্তর্লীন ক্ষয় ও ভাঙনকে ক্রমে বলিষ্ঠ স্বকীয়তায় ফুটিয়ে তোলা। অনুশীলন
সাপেক্ষ, দীর্ঘ একটা প্রসেস।
এলাহাবাদে আঠারো বছর কাটিয়ে প্রকাশ ফিরে
এসেছিলেন কলকাতায় বালীতে, ১৯৮৯ সালে। এরপর এক বছর ধরে ছবি আঁকার ক্যাম্প করেছেন শহরের
বিভিন্ন জায়গায়, শিয়ালদা রেল স্টেশানে, শহরের রাস্তায়, কখনো দক্ষিণেশ্বরে । এতে সেসময়ে বেশ আলোড়ন
হয়, জনসাধারণের মাঝে ছবিকে নিয়ে যাওয়ার এই প্রয়াস আকৃষ্ট করেছিল অনেক বুদ্ধিজীবি
কবি সাহিত্যিক চিত্রকরকে। এদের মধ্যে ছিলেন সাহিত্যজগতের শক্তি সুনীল সন্দীপন শিবনারায়ণ
রায় এবং আরও অনেকে। কলকাতার মুক্তমেলায় তাসা পার্টির বাজনা বাজিয়ে, গলায় গাঁদার
মালা আর হাতে স্কচের বোতল নিয়ে, ছোট ছোট চটজলদি স্কেচ এক দুই টাকায় বিক্রীও করেছেন
। ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন বাজছে বীটফেনের মিউজিক।
প্রকাশের আঁকা একটা বড় ক্যানভাস, যার
উপরিভাগে টেবিলে শায়িত এক নগ্ন নারীশরীর, আর নীচে মোনালিসার মুখ; তার কাছেই সুপরিচিত
রাজস্থানের কিষাণগড়ের রাধা, ভিক্ষাপাত্র হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ! এই ছবিটা রক্ষিত
আছে
ওঁর বন্ধু কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে।
প্রকাশের তেলরঙে আঁকা ক্যানভাসগুলোয় মূলতঃ
যে দুরকমের ছবি দেখা যায় তার একটা যদি হয় নিসর্গ প্রকৃতির ছবি, তবে অন্যটা শরীরী,
ফিগারেটিভ।
লন্ডন-প্যারিস-মাদ্রিদ-ফ্লোরেন্সে ঘুরে ঘুরে ইউরোপের চিত্রধারার সাথে পরিচিত হয়ে প্রকাশের এইসব ছবিতে এসেছিল ইরোটিক এলিমেন্টের ছোঁয়া ও চিরায়ত এক ব্যঞ্জনা। ওঁর ভালো লেগেছিল সেঝান, দালি, গঁগা ও ভ্যান গঘের ছবির ট্রিটমেন্ট। ইরোটিকের আকর্ষণে কলকাতায় বেশ্যা পল্লীতেও রাত কাটিয়েছেন। আর স্মৃতিতে রয়ে গেছে ইউরোপের উচ্ছ্বল সব সমুদ্রসৈকত। মনোজগত জুড়ে সেইসব সৈকতে দ্বিধাহীন পোশাকহীন নরনারীর সূর্যস্নান আর জলখেলার দৃশ্যগুলো। বড়সড় ক্যানভাসের পরিসরে মোটা বলিষ্ঠ রেখা টেনে টেনে সেই সমুদ্রতীরের দৃশ্যকে রূপ দিয়েছেন প্রকাশ, সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিকশানে, নারীশরীরের বিভঙ্গকে ভেঙ্গেচুরে বাঁকিয়ে, নিজস্ব দ্যোতনায়। বিপুল পরিশ্রম, মেধা, সৃজন ও সময় নিয়ে রচিত হয়েছে সেইসব প্রবল ও বিস্ময়কর ছবি।
লন্ডন-প্যারিস-মাদ্রিদ-ফ্লোরেন্সে ঘুরে ঘুরে ইউরোপের চিত্রধারার সাথে পরিচিত হয়ে প্রকাশের এইসব ছবিতে এসেছিল ইরোটিক এলিমেন্টের ছোঁয়া ও চিরায়ত এক ব্যঞ্জনা। ওঁর ভালো লেগেছিল সেঝান, দালি, গঁগা ও ভ্যান গঘের ছবির ট্রিটমেন্ট। ইরোটিকের আকর্ষণে কলকাতায় বেশ্যা পল্লীতেও রাত কাটিয়েছেন। আর স্মৃতিতে রয়ে গেছে ইউরোপের উচ্ছ্বল সব সমুদ্রসৈকত। মনোজগত জুড়ে সেইসব সৈকতে দ্বিধাহীন পোশাকহীন নরনারীর সূর্যস্নান আর জলখেলার দৃশ্যগুলো। বড়সড় ক্যানভাসের পরিসরে মোটা বলিষ্ঠ রেখা টেনে টেনে সেই সমুদ্রতীরের দৃশ্যকে রূপ দিয়েছেন প্রকাশ, সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিকশানে, নারীশরীরের বিভঙ্গকে ভেঙ্গেচুরে বাঁকিয়ে, নিজস্ব দ্যোতনায়। বিপুল পরিশ্রম, মেধা, সৃজন ও সময় নিয়ে রচিত হয়েছে সেইসব প্রবল ও বিস্ময়কর ছবি।
২০১৪ সালে আশি বছর বয়সে মৃত্যুর আগে প্রকাশের ছবির অনেক প্রদর্শনী হয়েছে
দিল্লী ও লক্ষ্ণৌয়ে ললিত কলা একাডেমিতে, কলকাতায় একাডেমী
অফ ফাইন আর্টস ও অন্যান্য অনেক গ্যালারীতে।
পেয়েছেন অনেক গুণীজনের প্রশংসা ও পুরস্কার। দেশে বিদেশে অনেক জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে
তাঁর সৃষ্ট অপূর্ব সব শিল্পকর্ম। তবে তারা কালোত্তীর্ণ হবে কিনা এই নিয়ে জীবদ্দশায়
তাঁর কোনও চিন্তা ছিলো না। সন্দীপের তথ্যচিত্রেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, “গরীব নোংরা
দেশে জন্মেছি, বাবামায়ের আনন্দের জন্য। একদিন মরে যাবো। তারপর আমার ছবির কী হবে তা
নিয়ে আদৌ চিন্তিত নই”।
সত্যিই কি অমরতাকে তাচ্ছিল্য করতে পেরেছিলেন
তিনি? উঠতে পেরেছিলেন পার্থিব সুখ দুঃখের ওপরে? কৌরবে ‘আমি’-নামক একটি কবিতায়
লিখেছিলেন তিনি, “দুঃখ কিছু নেই... / সুখ কিছু নেই... / শুধু আছে আমার- / মানব
শরীর / জন্মের পর”।
--------------------------------- ০০০ --------------------------------
No comments:
Post a Comment