এমন অভিজ্ঞতা তো অনেকেরই হয়, আমারও হয় মাঝেমাঝে, কিন্তু কীভাবে কোনও যোগাযোগ ছাড়াই কোথা থেকে আমাদের মনে ভেসে আসে কিছু নির্বাক
ইশারা,
এ আমার বোধশক্তির বাইরে।
এভাবে, মাত্র সাত আট দিন আগে (১৪-১৬ নভেম্বর ২০১৮), হঠাৎই আমার অবচেতনে ভেসে উঠেছিল আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের এক নিষিদ্ধ দ্বীপ-
সেন্টিনেলের কথা। আমি হঠাৎই তখন সেন্টিনেলদের নিয়ে কয়েকদিন কিছু পড়াশোনা করি।
খুঁজে দেখি তাদের বৃত্তান্ত। সভ্যতা থেকে স্বেচ্ছানির্বাসিত সেই নৃশংশ জনজাতি, যারা তাদের সবুজ দ্বীপের যেকোনও অতিথিকে দেখামাত্রই হত্যা
করেছে কয়েকবার, যাদের সাথে যোগাযোগের কোনও সম্ভাবনা
নেই বুঝে সরকার থেকে ত্যাগ করা হয়েছে সকল প্রচেষ্টা, নিষিদ্ধ হয়েছে সেই দ্বীপ-সৈকতের জলসীমার পাঁচ কিলো মিটারের মধ্যে সকল প্রবেশ।
১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমি আমার মেয়েকে হোয়াটসঅ্যাপে তাদের নিয়েই লিখেছিলাম।
পাঠিয়েছিলাম একটা ভিডিও ক্লিপ।
আজ সকালের আনন্দবাজার পড়ে জানা গেল, ওই ১৪ নভেম্বরই একটি ২৭ বছরের নির্ভীক আমেরিকান যুবক, নাম তার জন অ্যালেন চাউ, সকল নিষেধ অমান্য করে, সেন্টিনেলদের সাথে
ভাব জমাবে বলে রওনা দিয়েছিল ওই দ্বীপের উদ্দেশে। ১৬ নভেম্বর সে যখন একা একটা
ক্যানয় নিয়ে পৌঁছেছিল ওই দ্বীপের সৈকতে, দেখামাত্র তাকে জঙ্গলের ভেতর থেকে বিষাক্ত তির ছূঁড়ে হত্যা করে সেন্টিনেলরা।
সৈকতবালুতে অর্ধেক প্রোথিত তার লাশ দেখতে পাওয়া গেছে হেলিকপ্টার থেকে, কিন্তু শবদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসা যায়নি।
কাকে দোষ দেবো আমি ? সেই তরতাজা অবোধ যুবককে, যে শুধু ভালোবাসা আর প্রবচন দিয়ে আদিম মানুষের মন জয় করতে চেয়েছিল? নাকি, দোষ দেব ওই নৃশংস
স্বার্থপর সেন্টিনেলদের? নাকি প্রশাসনকে দোষ
দেব,
যারা ভারতীয় ভুখন্ডের একটি অংশ থেকে একজন পর্যটকের মৃতদেহ
উদ্ধার করতে পারেনি আজও?
No comments:
Post a Comment